সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন বাংলা গানের কিংবদন্তি গীতিকবি, চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার। রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা ৫৫ মিনিটে হাসপাতালে নেওয়ার পথে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর। এই কিংবদন্তির মৃত্যুতে শোবিজ অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
তিনি মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন দেশ বরেণ্য এ সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব গাজী মাজহারুল আনোয়ার। সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) ৬টার দিকে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মা খোদেজা বেগমের কবরে সমাহিত করা হয় বাংলা গানের আকাশে উজ্জ্বলতম এই গীতিকবিকে।
সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় গাজী মাজহারুল আনোয়ারের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে ‘গার্ড অব অনার’ প্রদান করা হয়েছে। এ সময় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও সংগঠনের মানুষ গাজী মাজহারুল আনোয়ারকে শ্রদ্ধা জানাতে আসে।
বাদ জোহর বিএফডিসিতে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এফডিসির প্রশাসনিক ভবনের সামনে সংগঠনগুলো একে একে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় কালজয়ী এই গীতিকারকে।
এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন রোজিনা, ওমর সানি, বাপ্পী, অরুণা বিশ্বাস ও সাইমনরা। পাশাপাশি শিল্পী সমিতির পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান ইলিয়াস কাঞ্চন ও নিপুণ। আরও ছিল পরিচালক সমিতি, বাংলাদেশ ফিল্ম ক্লাব, এফডিসি প্রশাসন, বাঙালি সাংস্কৃতিক বন্ধন, চলচ্চিত্র পরিষদ, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ, চলচ্চিত্র ব্যবস্থাপক সমিতি।
এরপর বাদ আসর গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে তার মায়ের কবরে সমাহিত করা হয়েছে।
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের শেষ ইচ্ছা ছিল মায়ের কবরে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন। মায়ের বুকেই মিশে যাবেন এই কিংবদন্তি। ঠিক তেমনটাই হলো। মায়ের কবরেই তার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০ হাজারের অধিক গানের গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৬৪ সালে রেডিও পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের সূচনালগ্ন থেকে নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেছেন। স্বাধীনতা ও দেশপ্রেম নিয়ে অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা ও সুরকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার একাধারে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক ও প্রযোজক। ১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকে কাহিনি, চিত্রনাট্য, সংলাপ ও গান লেখাতেও অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দেন তিনি।