যুব কর্মসংস্থান ও শ্রম সম্পর্ক উন্নয়নে বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব জোরদার করছে বাংলাদেশ : ড. আসিফ নজরুল
রিয়াদ (সৌদি আরব), ২৯ জানুয়ারি ২০২৫ :
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল আজ সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত গ্লোবাল লেবার মার্কেট কনফারেন্স (জিএলএমসি)-এ বাংলাদেশের যুব কর্মসংস্থান উন্নয়ন ও আন্তর্জাতিক শ্রম সহযোগিতা শক্তিশালীকরণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
মন্ত্রিপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে ড. নজরুল স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইআইপি) এর সাফল্য তুলে ধরে বলেন, ইতোমধ্যে আইটি, স্বাস্থ্যসেবা ও উৎপাদন শিল্প-সহ বিভিন্ন খাতে ২ লাখের বেশি যুবক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের ৭০ শতাংশ মাত্র ছয় মাসের মধ্যে কর্মসংস্থান পেয়েছেন, যা শিল্পভিত্তিক প্রশিক্ষণ ও সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের কার্যকারিতা প্রমাণ করে।
উপদেষ্টা বলেন, আমাদের লক্ষ্য শুধু চাকরিপ্রার্থী তৈরি করা নয়, বরং আমাদের যুবসমাজকে দেশীয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারে পরিণত করা। তিনি ডিজিটাল জব-ম্যাচিং প্ল্যাটফর্ম, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিত্তিক কর্মসংস্থান সমাধান এবং বাংলাদেশের বিশ্বব্যাপী দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইন ফ্রিল্যান্সার সরবরাহকারী হিসেবে ৫শ’ মিলিয়নের বেশি মার্কিন ডলার আয়ের কথা উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের টেকসই কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণ, শিক্ষা ও শিল্পের মধ্যে সংযোগ স্থাপন এবং প্রবাসী শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে আসিফ নজরুল আন্তর্জাতিক অংশীদারদের সঙ্গে সহযোগিতা আরো গভীর করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সৌদি মানব সম্পদ মন্ত্রী উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, প্রতিষ্ঠার মাত্র এক বছরের মধ্যে জিএলএমসি শ্রম খাতের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে একটি নেতৃস্থানীয় প্ল্যাটফর্ম হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এবারের আলোচনায় বৈশ্বিক বাজারের প্রধান চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনাগুলো বিশ্লেষণ করা হচ্ছে, যা শ্রম শক্তির গতিশীলতা ও উদ্ভাবনী সমাধান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সুযোগ তৈরি করছে।
আজ সৌদি আরবে বিশ্বের ১শ’টিরও বেশি দেশের নীতিনির্ধারক, শিল্প নেতৃবৃন্দ, গবেষক, উদ্ভাবক এবং শ্রম বিশেষজ্ঞরা জিএলএমসি-এর দ্বিতীয় সংস্করণে একত্রিত হন। এই সম্মেলন শ্রম বাজারের ভবিষ্যৎ রূপরেখা নির্ধারণ এবং মূল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
কাতার-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বৈঠক
সম্মেলনের সাইডলাইনে, ড. আসিফ নজরুল কাতারের শ্রমমন্ত্রী ড. আলি বিন সাঈদ বিন সামিখ আল মাররিরের সঙ্গে বৈঠক করেন। তিনি কাতারে বাংলাদেশি শ্রমিকদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান এবং ফিফা বিশ্বকাপ ২০২২-সহ বিভিন্ন বৃহৎ অবকাঠামো প্রকল্পে তাদের ভূমিকার স্বীকৃতি প্রদান করায় কাতারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
উপদেষ্টা কাতার সরকারের শ্রম সংস্কারকে স্বাগত জানিয়ে শ্রমিকদের উন্নতির জন্য বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাব উত্থাপন করেন, যার মধ্যে রয়েছে: শ্রমিকদের জন্য ব্যাপক বিমা কাভারেজ; প্রাকৃতিক মৃত্যু ও আইনি জটিলতার ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা; কাতারের ভিশন ২০৩০-এর আওতায় স্বাস্থ্যসেবা; প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে দক্ষ পেশাজীবীদের নিয়োগ বৃদ্ধি; বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানোর খরচ কমানো এবং আরো স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা।