যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে কমছে। গত বছর রপ্তানি কমেছিল ২৫ শতাংশ। চলতি বছরেও কমছে। গত ফেব্রুয়ারি শেষে রপ্তানি কমার হার দাঁড়ায় ১৯ শতাংশ। বাংলাদেশ নেতিবাচক ধারা থেকে বেরোতে না পারলেও অপর দুই প্রতিযোগী চীন ও ভিয়েতনাম এই বাজারে পোশাক রপ্তানিতে ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে।
ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা চলতি বছরের প্রথম দুই মাস জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ১ হাজার ২১৮ কোটি মার্কিন ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেছেন। এই আমদানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ কম।
২০২২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা মোট ৯ হাজার ৯৮৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করেন, যা ২০২৩ সালে ২২ শতাংশ কমেছে। অর্থাৎ গত বছর বিভিন্ন দেশ থেকে ৭ হাজার ৭৮৪ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্র। এই বছর যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ পাঁচ দেশের রপ্তানি প্রায় একই হারে কমেছে। তবে চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে চীন ও ভিয়েতনামের পোশাক রপ্তানি সামান্য বেড়েছে। তবে বাংলাদেশের মতো ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি কমেছে।
আগে আমরা ৪০–৬০ দিনে যেসব পণ্য দিতে পারতাম, সেগুলো দিতে এখন লাগছে ৫০-৮০ দিন। ফলে চীন ও ভিয়েতনামের রপ্তানি ইতিবাচক ধারায় ফিরলেও আমরা পারছি না।
মোহাম্মদ হাতেম, নির্বাহী সভাপতি, বিকেএমইএ
অটেক্সার তথ্যানুযায়ী, বাংলাদেশ চলতি বছরের প্রথম দুই মাসে যুক্তরাষ্ট্রে ১১৯ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করে। এই রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৯ দশমিক ২৪ শতাংশ কম। যদিও গত জানুয়ারিতে রপ্তানি ৩৬ শতাংশ কমে। তবে রপ্তানি কমলেও বাজার হিস্যায় বড় কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফেব্রুয়ারি শেষে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের হিস্যা ছিল ৯ দশমিক ১২ শতাংশ। এই বাজারে বাংলাদেশ তৃতীয় শীর্ষ পোশাক রপ্তানিকারক।
রপ্তানি কমে যাওয়ার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আরেক দুশ্চিন্তাও আছে। মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি দপ্তরের (ইউএসটিআর) অনুরোধে বাংলাদেশসহ শীর্ষ পাঁচ পোশাক রপ্তানিকারক দেশ নিয়ে তদন্ত শুরু করছে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশন (ইউএসআইটিসি)। কীভাবে এ দেশগুলো মার্কিন পোশাকশিল্পের বাজারের এত বড় অংশ দখল করে রেখেছে, তা তথ্যানুসন্ধান করে দেখবে কমিশন। এই পাঁচ দেশের কেউ অসুস্থ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাজার দখল করেছে কি না, তা খুঁজে বের করাই প্রধান উদ্দেশ্য এ কমিশনের। অন্য চার দেশ হলো ভারত, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও পাকিস্তান।